আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬১ সালে কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব সংঘটিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। আজ বাংলাদেশের কৃষিখাতের যে উন্নয়ন তার পিছনের কারিগর আমাদের এই প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে প্রতি বছর হাজার হাজার রিসার্স এর কাজ হয়। এরই ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে নতুন নতুন জাতের উদ্ভব হয়। আজ বাংলাদেশ কৃষিতে অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। ১২০০ একর জায়গা নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ৬টি ফ্যাকাল্টি রয়েছে। এখানে ১৪টি হল রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি পুরুষদের জন্য আর ৫টি মহিলাদের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ব্রক্ষপুত্র নদ, যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে এক মোহনীয় সৌন্দর্য প্রদান করেছে। এখানে ২৫ একর এলাকা জুড়ে রয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন, যেখানে ১৫০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। এখানে রয়েছে একটি সুবিশাল সমৃদ্ধশালী গ্রন্থাগার, যার বইয়ের সম্ভার আমাদেরকে সমৃদ্ধ করে। এছাড়াও, ২০০৭ সালে দেশের সর্বপ্রথম এবং একমাত্র একটি কৃষি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়, যাতে প্রায় ৫০০ প্রজাতির কৃষি উপকরন রয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি প্রধান খামার রয়েছে, যার মধ্যে একটি ডেইরি ও একটি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এছাড়াও, আমাদের বিশ্বদ্যিালয়ে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (বিনা) এবং বাংলাদেশ ফিশারিজ নিউক্লিয়ার ইন্সটিটিউট রয়েছে (বিএফআরআই)। আমি ২০০১-২০০২ সেশনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বদ্যিালয়ে পশুপালন অনুষদে ভর্তি হই। আমরা বিশ্বদ্যিালয়ের প্রথম সেমিষ্টার ব্যাচ ছিলাম। প্রথম সেমিষ্টার ব্যাচ হিসেবে আমাদের অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয় এবং আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের তড়িৎ অনুধাবন ও বেশ কিছুদাবী আদায়ের মাধ্যমে দ্রুতই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি বেশ কিছু সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম যেমনঃ সেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন, হিন্দুদের ধর্মীয় সংগঠন সনাতনসংঘ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন চারণ। বাঁধন থেকে আমি প্রায় ১২ বার রক্ত দিয়েছি। সনাতনসংঘের সাথে যুক্ত থেকে বিশ্বদ্যিালয়ে একটি কেন্দ্রীয় মন্দির প্রতিষ্ঠায় সহযোগী হই, যা বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম এবং সম্ভবত একমাত্র মন্দির। চারণের সাথে যুক্ত থেকে আমি আত্মোনমোচন করেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত শাস্তি নাটকটি দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এছাড়া মলয় ভৌমিক রচিত চৌরাস্তা নাটকটিও সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে। চৌরাস্তা নাটকটি সর্বশেষ যখন মুক্তমঞ্চে মঞ্চস্থ করি তখন আমি ভিন্ন মঞ্চের অভিজ্ঞতা আর করোও ছিলনা। কিন্তু, নতুনেরা এত সুন্দরভাবে মঞ্চে অভিনয় করলো যে আমি মন্ত্রমুগ্ধেরমত তাদের অভিনয় উপভোগ করলাম এবং তাদের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম। বিশ্ববিদ্যালয় দিনগুলোর স্মৃতি এখনও আমাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে। এখনও মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আবার ফিরে যাই। আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে অনেক অনুভব করি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন আমাকে শুধু প্রাতিষ্ঠান স্বীকৃতিই দেয়নি, আমাকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এ জীবন আমাকে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে মানুষের সাথে মিশতে শিখিয়েছে, মানষকে সম্মানিত করতে শিখিয়েছে। পরিশেষে, এই পুনঃমিলনের সাথে যারা ওতোপ্রতোভাবে জড়িত ছিল তাদের প্রতি আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ, অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা। অনুপম বসু পশুপালন অনুষদ
আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়
Anupam Basu
Oct 26, 2025
1 Comments
|
1 Comments